শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭

রক্তচোষা লাভ

এনাম ভাই গতকাল এক ঘটনা বলছিলেন। আমিও ঘটনা শোনার জন্য সোজা হয়ে বসলাম। কেন জানি না মানুষ যেকোনো গল্প শোনার জন্য পাগল। মানুষের মাঝে সৃষ্টিকর্তা যদি এই গল্প শোনার আগ্রহ সৃষ্টি করে না দিতেন তবে মনে হয় পৃথিবীতে অনেক কিছুই হতো না। যাহোক উনি বলছিলেন একজনের কাছে উনি কিছু টাকা পাবেন। তো তিনি দোকান ফেলে প্রতি সন্ধ্যায় তার বাসায় গিয়ে খোঁজ নেন সে ফিরলো কিনা। ফিরলেই তাকে টাকার কথা বলবে। সময় তো অনেক পেরুলো।

এনাম ভাইকে তো পরিচয় করিয়েই দিলাম না। এনাম ভাই হলেন এক চটপটি বিক্রেতা। তিনি রাস্তায় বসে চটপটি বিক্রি করেন। তার সাথে আমার পরিচয় টিউশনি যাওয়ার পথে নিয়মিত চটপটি খেতে খেতেই। যাহোক, জিজ্ঞেস করলাম তো পেলেন ওনাকে?
-জ্বি ভাই পাইছি। কিন্তু সে আমাকে পুরো টাকা দেয়নি। দিয়েছে তিন হাজার টাকা।
-তো বাকি টাকা কবে দিবে বলছে সে?
-এখনো তো ভাই সব টাকা বাকি। সে বলছে আগামী মাসে সব টাকা দিবে।
-কি বলেন? তিন হাজার টাকা আজ দিলে তো সতেরো হাজার বাকি থাকে, তাই না?
- না ভাই। সে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিবে।
-ঘটনা খুলে বলেন তো ভাই?

এনাম ভাই একটু লজ্জা পাচ্ছিলেন। তিনি ব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন এ পর্যায়ে। কিন্তু আমার আগ্রহের কাছে হেরে গেলেন।

-আমার এক বন্ধু চা-পাতা সাপ্লাই দেয় দোকানে দোকানে। ভালই চলে তার ব্যবসা। কিন্তু সমস্যা হল তার পুঁজির পরিমাণ কম। সে তার ব্যবসা বাড়াতে চাইছে অনেকদিন ধরে। সবার কাছ থেকে টাকা ধার চাইছে সে। আমার কাছে আসে কয়েকবার। আমি বলি, ভাই দেখ আমার কাছে তেমন টাকা নাই। আমি নিজে খেয়ে পড়ে চলি কোনোমতে। সে চলে যায় সেবার।
- তো তারপর কি হল?
- আমার এক দূরসম্পর্কের চাচী বুঝলেন, স্বামী মারা গেছে। তো এক মেয়ে নিয়ে ওনার সংসার। কিছু ভাড়াতাড়া আসে এ নিয়েই চলে। চাচী আমাকে বললেন ওনার কিছু টাকা আছে এগুলো খাটাতে পারি কিনা দেখার জন্য। আমি বলি, চাচী এগুলো তো ভাল না। আপনি বরং এগুলো দিয়ে কিছু একটা ব্যবসা করেন। বা জমা রেখে দেন। উনি বলেন, আমি কি ব্যবসা করবো আবার! আর টাকা গুলো এভাবে ফেলে রাখার চেয়ে খাটানোই ভাল হবে।

আচ্ছা এভাবে কয়েকদিন যায়। তারপর আমার ঐ বন্ধু আবার আসে আমার কাছে। সে এবার বলে, তুই যদি টাকা দিতে না পারিস তবে কারো কাছ থেকে যোগাড় করে দে। আমি মাসে মাসে লাভ দিব। আমি বলি আমার পার্টি আছে। কিন্তু তোকে স্ট্যাম্প সই করতে হবে। ও বলে কোনো সমস্যা নেই। এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা করে ওকে টাকা দেওয়া হয়।

- কতটাকা দিয়েছেন ভাই?
- বেশি না মাত্র বিশ হাজার টাকা। কিঞ্চিৎ হেসে তিনি উত্তর দিলেন। আমার আগ্রহ লাভে। তো কতো টাকা লাভ ধরা হল?
- মাসে ৩ হাজার টাকা। আর সে মূল টাকা দিবে দু'মাস পর।
- ও আল্লাহ!  ২০ হাজার টাকার জন্য ৩ হাজার করে ২ মাসে ৬ হাজার টাকা লাভ?
- পুরা ঘটনা শুনেন ভাই। আরো অবাক হবেন।
- আচ্ছা তারপর কি হল?
- প্রথম মাসে সে লাভ দেয়। দ্বিতীয় মাসেও দেয়। দ্বিতীয় মাসে চাচীর মেয়ের বিয়ে। অনেক টাকার প্রয়োজন। চাচী সবার কাছ থেকে টাকা তুলছেন। আমাকে বললেন তোমার বন্ধুর গুলোও নাও। আমি বললাম, চাচী ওর সাথে তো চুক্তি হইছে ২ মাস পর সে টাকা দিবে। এখন তো চাওয়া অন্যায় হবে। উনি বললেন আচ্ছা ঠিক আছে। আগামী মাসে কিছু ফার্নিচার দিব মেয়ের শ্বশুরবাড়ি তখন নিয়ে দিও।

তো পরের মাস এলো। সে এ মাসেও লাভ দিল। কিন্তু মূল টাকা সে দিতে পারছে না। আমাকে অনেক করে বুঝায়। এদিকে চাচীও অনেক চাপ দিচ্ছে। আমি চাচীর দিকে তাকিয়ে আমার কাছ থেকে ওনাকে বিশ হাজার টাকা দিয়ে দেই।

- মানে আপনার চাচী লাভ পায় তিন মাসে ৯ হাজার আর মূল টাকা ২০ হাজার। সব মিলিয়ে ২৯ হাজার? বাহ এর চেয়ে ভাল ব্যবসা আর কি হতে পারে? তারপর কি হয়?

- এরপর ভাই ওকে আমি একমাসের সময় দেই। গতকাল ওর দেখা পাই। সে আমাকে আরো তিন হাজার টাকা দেয় লাভ। বলে এই লাভও রাখো আমি পুরো টাকা তোমাকে আগামী মাসে দিব।

- তারমানে ২০ হাজার টাকার বদলে সে এখন পরিশোধ করে ১২ হাজার টাকা তাও শুধু লাভ। আসল এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। মূল টাকার ৬০% সে পরিশোধ করে ফেলেছে লাভ হিসেবেই?

- বিশ্বাস করবেন না ভাই। ঐ টাকা বাসায় নিয়ে সারারাত আমার এক ফোটা ঘুম হয় নাই। কি করবো আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ভোরে উঠে আমি তাড়াতাড়ি বাসা থেকে অনেক দূরে গিয়ে পুরা তিন হাজার টাকা মানুষকে দান করে আসছি। তারপর একটু ভাল লাগতেছে।

আমি একটু হাসি পেল। উনি কিছু মনে করলেন না। ভাই আপনি আবার সেই টাকারে হালাল করার চেষ্টা করেছেন? আর কি বলতাম। তবে ভাল মানুষের পেটে হারাম তেমন একটা হজম হয় না। ভাল করেছেন।

- কি আর করা ভাই। সে তো টাকা দিচ্ছে না। আরেক প্লেইট দিবো নাকি চটপটি?
- দেন। আবার খিদে পেয়ে গেল।

মাঝে মাঝে ভাবি এই দেশের সাধারণ অশিক্ষিত মানুষগুলো যে অল্প পরিমাণে আয় করে তা খেয়ে-পড়ে জমানো তো দূরের কথা এই রক্তচোষা লাভ (সুদের হাল পরিভাষা) দিতেই হয় না। গরীব গরীব হয় আর টাকা খাটানো লোক লাভে লাভবান হয়।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই হারাম এবং নির্লজ্জ কাজ থেকে দূরে রাখুন।

মুহাম্মদ আরিফ
১৬ নভেম্বর ২০১৭

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

প্রবাসীদের বিয়ে

প্রবাসীদের নাকি আমাদের দেশের মেয়েরা বিয়ে করতে চায় না। আমি আসলে ভিডিওটা (আসলে প্রবাসীদের মেয়েরা কেন বিয়ে করতে চায় না সেটা নিয়ে একটা prank video করে কিছু youtuber) দেখিনি। তবে দেখতেও চাই না। অনেক দিন পর লিখতে বসলাম আবার। দেখি আজ এ ব্যাপারে কি লিখতে পারি।

প্রথমত,
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল আপনি যখন একটা নিউজ পেয়েছেন তখন অবশ্যই এর সোর্স দেখবেন। সেই নিউজ কে প্রকাশ করলো আর এর গুরুত্বই বা কতখানি! এটা আমরা অনেক সময়ই করি যে সস্তা অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলোর চকমকে হেডলাইন পড়ে নিউজ লিঙ্কে ক্লিক করি আর সেই সস্তা রিপোর্ট গুলো পড়ি। কাজের কাজ কিছুই হয় না বরং নিউজ পোর্টাল গুলো আমাদের আবেগ নিয়ে খেলা করে আর লাভবান হয় প্রায় সময় (যা হোক এ নিয়ে অন্য একদিন লিখার ইচ্ছা আছে)। এখন আপনাদের উত্তেজিত হওয়া সেই ভিডিওটা কি কোনো পরিচিত মিডিয়ার ধারণ করা? এদের কি তথ্য মন্ত্রণালয় এর নিবন্ধন আছে? হয়ত এসব প্রশ্ন আপনার মনে উকিও দেয়নি। যদি না হয় তবে এ নিয়ে এতো উত্তেজিত হওয়ার কোনো মানেই হয় না।

দ্বিতীয়ত,
আমাদের দেশের মানুষ সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কিন্তু জানেই না যে কোন বিষয় সবার সাথে শেয়ার করা যাবে এবং কোনটি শেয়ার করার কোনো দরকারই নেই। অনেক মানুষ দেখা যায় এরা এমনভাবে নিজেদের উজার করে দেয় যে সোশাল মিডিয়ার ভারচুয়াল ফ্রেন্ডরা তার পাতিলের খবর পর্যন্ত জানে। আবার কেউ কেউ ছবি দিয়ে দিয়ে নিজেকে মডেল এর পর্যায়ে নিয়ে যায়। আবার কিছু মানুষ আছে যারা গুজব বা অদরকারি সংবাদ ছড়ায়। এদের মধ্যে কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করে আবার কেউ কেউ অতি আবেগী হয়ে করে। একটু খেয়াল করলেই কি আমরা বুঝতে পারি না যে এই নিউজটার কোনো মূল্যই নেই কিন্তু আমরা একে যেভাবে পারি শেয়ার করছি। যেন আমরা সবাই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা।

তৃতীয়ত,
আচ্ছা আমাদের দেশের প্রবাসীরা কি চিরজীবন কুমার থাকে? আমি যত প্রবাসী দেখেছি তাদের বিয়ের ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যাই হয় না। কারণ তারা টাকা আয় করে স্বাবলম্বী হলে তারপরেই বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতে থাকে এবং প্রতিষ্ঠিত পাত্রের জন্য পাত্রী খুঁজে পাওয়া কোনো ব্যাপারই নয় এ কথা যেকোনো ঘটক বলবেন।
শিক্ষার ব্যাপারে যদি বলি, প্রবাসীরা স্বাভাবিকভাবেই তেমন পড়ালেখা করেন না। কিন্তু তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় না পড়ালেখা তেমন কোনো ফ্যাক্টর হয়। কিছুদিন আগেও এক বিয়ের দাওয়াতে গেলাম যেখানে প্রবাসী স্বামীর চেয়ে তার স্ত্রী অনেক লেখাপড়া করেছে। আচ্ছা তাহলে কি এখনো বলবেন আমাদের দেশের মেয়েরা প্রবাসীদের বিয়ে করতে চায় না?

শেষ করতে চাই,
প্রবাসীদেরও সমস্যা আছে। ওনারা ধোয়া তুলসী পাতা নন। এই পুরো ব্যাপারটা ভাইরাল করার মহান দায়িত্ব তারা কাঁধে তুলে নেন আবার জুতা দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার ভিডিও ও তৈরি করেন। প্রবাসীদের দাম্পত্য জীবনে সমস্যাও বেশি হয় সাধারণত। যাহোক সেটা আলোচ্য বিষয় নয়। কিন্তু আপনি প্রবাসী, দেশের রেমিটেন্স শ্রমিক, দেশের শুভাকাঙ্ক্ষী আপনারও কিছু দায়িত্ব আছে। যেকোনো কিছু ভাইরাল করার মহান দায়িত্ব নেওয়ার আগে ভেবে দেখবেন এর ফল কি হতে পারে.... আর একটা কথা মনে রাখবেন এক টুকরো ঢাকা যেমন কখনো সারাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। কয়েকটিও তেমন সব মেয়ের প্রতিনিধিত্ব করে না।

মুহাম্মদ আরিফ
২৪ জুলাই ২০১৭

রবিবার, ২১ মে, ২০১৭

একজন আদর্শ ছাত্রের ময়নাতদন্ত

He is a good student.
সে একজন ভাল ছাত্র(!)।

ভাল ছাত্র/ছাত্রী!
কথাটা শুনলেও আমার কেন যেন হাসি আসে। কারণ ভাল ছাত্র মানেটা কী? সজ্ঞা কী?  কতগুলো A+ এর সমষ্টি! নানা এখন সেটা Golden(!) A+ এর সমষ্টি। একটা ছাত্র PSC, JSC, SSC, HSC তে গোল্ডেন A+ এবং বিভিন্ন সরকারি বৃত্তিধারী, সে হল একজন ভাল বা অদর্শ ছাত্রের রোল মডেল। আমি আসলে এখনো নিশ্চিত নই এত A+ ধারীকে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি উপাধিতে ঘোষিত করেছে বা করবে। তারপর সেই A+ ধারণকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে শুরু হবে CGPA এর জন্য লড়াই। যারা 3.5+ রাখতে পারবে শুধু তারাই ভাল ছাত্র। BCS পরীক্ষা দিতে যাবেন তো দেখবেন মেধাবীদের তুলনায় কোটা ও দলীয়দের প্রভাব বেশি।

আচ্ছা বাকি সব ছাত্র বা ছাত্রীরা শিক্ষার্থী জগতের কলঙ্ক? তারা কি জীবনযাপন করতে পারে না? সে কি করে চলে যে পড়ালেখাই করেনি?
ছাত্রসমাজ এর বেশিরভাগ হল অমনোযোগী ছাত্র আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী, আমাদের সমাজের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী। তাহলে তারা কেন পড়াশোনা করে? সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধাবীদের জায়গা দেওয়ার পর মেধাহীনদের জন্য কেন এত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়? একটা দেশের সাবেক আমলা এবং মন্ত্রী যখন বলেন যে পিলার ধরে নাড়াচাড়া করলে বহুতল বিল্ডিং ধসে পড়ে তখন আমার মনে হয় আমরা আসলে মগেরমুল্লুকে আছি।

এখানে একজন ছাত্রের নিজস্ব কোনো ইচ্ছা নেই। বাবা-মা চায় তার সন্তান ডাক্তার হবে তাই তাকে ডাক্তার হতেই হবে। বাবা-মা চায় ইঞ্জিনিয়ার, উকিল বা ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু একজন ছাত্রের নিজের কোনো ইচ্ছে নেই। কেউ যদি লেখক,গায়ক অথবা চিত্রশিল্পী হতে চায় তবে আমরা তাকে বাঁকা চোখে দেখি যেন কোনো ভিন গ্রহ থেকে আগত প্রাণী। মাঝে মাঝে ভাবি সবাই যদি সেরা বিষয়গুলো পড়ার জন্য পাগল হয়ে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা, ইতিহাস, চারুকলা, সমাজবিদ্যা, পালি এগুলো কারা পড়ে? তারাও তো আমাদের মত মানুষ।

A+ এর কথা বললে বলতে হবে ঢাকা বোর্ডে চলে যান। সেখানে সব অতিমেধাবী শিক্ষার্থী, যাদের শিক্ষকেরা(সম্মান রেখেই বলছি) পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন সমাধান করে দেন। ৮ বোর্ডে ৮ রকম প্রশ্ন কিন্তু A+ এর কোটা ৮০ এর ঘর ছুঁলে তারপরেই পাবেন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, সমাপনী পরীক্ষার্থীরা বড়দের কাছে ইন্টারনেটে কিভাবে প্রশ্ন পেতে হয় জিজ্ঞেস করে। JSC, SSC, HSC পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার আগেরদিন চাতক পাখির মত ফেইসবুকে ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটের দিকে তাকিয়ে থাকে, এই বুঝি প্রশ্ন এলো।

অনেক A+ ধারীকে চিনি যাদের নিজে থেকে এক পৃষ্টা কিছু লিখতে বললে শুধুই ভুল বানান চোখে পড়বে। কারণ ভাল ছাত্ররা শুধু পাঠ্যবই পড়ে। আমাদের সমাজব্যবস্থা,  যে ছাত্র গল্পের বই পড়ে সে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি যদি নাই জানলাম আমার আশেপাশের মানুষের জীবনব্যাবস্থা কেমন তাহলে আমার জীবনটা থেকেও না থাকার মত।

পরিশেষে,
একজন ছাত্র, তার বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ থাকতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে থাকতে পারে অনাগ্রহ। সব ছাত্রকেই যে ক্লাসের টপার হতে হবে এমনটা কখনোই নয়। সে সময় নেবে তার গতি বেছে নেওয়ার জন্য যেটা তার জন্য ভাল। সেজন্য তাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে দিতে হবে সে জ্ঞান। এই সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজব্যবস্থা এর চোখে একজন অমনোযোগী ছাত্র হতে পেরে আমি গর্বিত।

বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, আগে একটা সময় ছিল যখন পরীক্ষায় পাশ করতো কম আর ফেল করতো বেশি। বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী দেখা যেত কয়েকবার পরীক্ষা দিয়ে তারপরই পাশ করতো। অনেককে SSC পরীক্ষার হলে যেতেই কয়েকবার টেস্ট পরীক্ষা দিতে হোত। তাদের প্রতি আমার অসংখ্য শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকে লিখা শেষ করছি। কারণ তারা চেষ্টা করে অনেক কঠিন পদ্ধতির মধ্যে পাশ করতো।

মুহাম্মদ আরিফ
৪ মে ২০১৭