রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৫

বৈশাখ ও বিবস্ত্র নারী

শালীনতা কী আসলে? এর কি কোন নিয়ম আছে? এক কথায় বলতে গেলে শালীনতা হল আসলে মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গি। মানুষের পোষাক-পরিচ্ছেদ, আচার-ব্যাবহার এর সমাজ কর্তৃক সৃষ্ট অলিখিত একটি নিয়ম। এটি আসলে সারা পৃথিবীতে এক নয়। পৃথিবী ব্যাপী এটি ভিন্ন রুপ প্রদর্শন করে। যেমন ধরা যাক আমেরিকা অথবা ইউরোপ এ কোন মহিলা যদি অর্ধ নগ্ন হয়ে হাটে তবে সেটিও তাদের শালীনতা এর স্কেল এ শুদ্ধ। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে তা সম্ভব নয়। আবার যদি আরব দেশগুলোতে যদি কেউ এরকম করে তবে তাকে হয়ত জেলেও যেতে হতে পারে।আবার পুরুষের ক্ষেত্রেও নানা নিয়ম রয়েছে।
  আজ শালীনতা শেখানোর জন্য লিখতে বসিনি। আজ বর্তমান সময়ে সকলের আগ্রহের ঘটনা -টিএসসি কেলেঙ্কারি নিয়ে লিখব। সবাই আসলে খুবই উৎসুক এ ব্যাপারে কিছু বলার জন্য অথবা কারো কাছ থেকে শোনার জন্য। আমাকেও কয়েকজন এ ব্যাপারে আমার অভিমত জানতে চেয়েছে। আমি হেসে একটাই উত্তর দিয়েছিলাম, আমি সেই মেয়ে গুলোর পোষাককে দায়ী করব না। আবার আমি সেই অধম এর সন্তানদেরও দোষারোপ করব না। তাহলে আমরা একটু খুঁড়ে দেখি ব্যাপারটা কাকে আসলে দোষারোপ করা যায়।
     কাউকে দোষ দেওয়ার আগে ঘটনাটার বর্ণনা দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রতিবারের মত এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা উৎসব মুখর ছিল। সকাল থেকে দলে দলে নারী-পুরুষ এদিকে সেদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে একদল ছেলে একটু ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়েই জড়ো হয়েছিল। তারা ছিল খুবই সঙ্ঘবদ্ধ। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মহিলাদের উত্যক্ত করা। বিশেষ করে যৌন হয়রানি এবং বিবস্ত্র করাই ওদের উদ্দেশ্য ছিল। বলতে গেলে তারা অনেকটা সফল ছিল। গেইট এর দিক থেকে কোন মহিলা বেরিয়ে এলেই তারা আস্তে আস্তে জড়ো হয়ে তাকে তার স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তারপর সবার সামনেই তাকে নানা ভাবে হয়রানি করে। টিএসসি এলাকার সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত লিটন নন্দি এর প্রথম আলোতে বলা বিবরণ এ এর সুন্দর উদাহরণ পাওয়া যায় (প্রথম আলো ২০/০৪/২০১৫)। তিনি কয়েকজন মেয়েকে বাঁচান এতে কিল-ঘুষিতে তার হাত ভেঙে যায়। পুলিশ নির্বাক দর্ষক এর ভূমিকা পালন করে। অনেক মহিলা লাঞ্চিত হয় আবার অনেকে লিটন নন্দির মত কিছু মানুষের কল্যানে বেঁচে যায়। মোটামুটি এই ছিল সেই দিনের ঘটনা।
    শুরুতেই খানিকটা শালীনতার জ্ঞান দিয়েছিলাম। কারনও একটা ছিল। কারন এই ঘটনার পর আমাদের দেশের অনেক লোক মেয়েগুলার পর্দা নিয়ে মন্তব্য করেন বা এখনও করছেন। আবার অনেকে এদের বিরুদ্ধে গিয়ে বলছেন যে পর্দার চেয়ে চোখের লজ্জা জরুরী।  আমার মতে আসলে দুটোই ঠিক। ঠিক তবে আংশিক আবার এ ক্ষেত্রে একেবারেই ঠিক নয়। যারা এসব মন্তব্য করছেন তারা তাৎক্ষণিক উৎপন্ন হওয়া ক্ষোভ থেকে বলছেন। গভীরভাবে ভাবলে অন্য কিছু বেরিয়ে আসবে।
    পহেলা বৈশাখ উৎসব পালন সম্পর্কে আমি সব সময়ি অনিচ্ছুক। আসলে পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমার সমস্যা নেই। এর উৎসব পালনের ধরন নিয়ে যত ঝামেলা। যাহোক সেটা আলোচ্য বিষয় নয়। যদি আমি সেইদিনের সেই ছেলেগুলোকে ঢালাউভাবে দোষ দিতে যাই তাতে কিছুটা সমস্যা আছে। ওরা তো আসলে.... কোন অপরাধ করেনি। কারন পুলিশের মুখপাত্রের মতে ঐদিন সেখানে কোন বস্ত্রহরণ এর ঘটনাও ঘটেনি। উপরন্তু জনতা যাদের পুলিশের হাতে দিয়েছিল, বিশেষ(!) সংগঠন এর লোক হওয়ায় পুলিশ তাদের চা-নাস্তা খাইয়ে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়েছে। আবার যদি আমরা পুলিশের সেই মুখপাত্রকে পাগল বিবেচনা করে ধরে নেই যে সেদিন সেখানে বস্ত্রহরণ এর ঘটনা ঘটেছিল তবুও তাদের দোষ নেই। কৌতূহল জাগছে কি? আচ্ছা যদি কোন বাচ্চা স্কুলে গিয়ে অথবা বাসায় সবার সাথে ভিন দেশী ভাষায় কথা বলে তবে আমরা দোষ দেই ভিনদেশী কার্টুন চ্যানেল এর। কিন্তু বাচ্চাগুলোর অভিভাবক সচেতন হলে তারা আর সেই চ্যানেল দেখতে পারত না। ঠিক একই ভাবে আমাদের বর্তমান অবস্থা থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে তাই সেই ছেলেগুলো শিখছে। সারাদিন তারা যদি শীলাকি জাওয়ানি, সানি লিওন ও পর্ণ মুভি দেখে তবে তাদের কাছ থেকে আপনি ভাল ব্যবহার আশা করাটাই অন্যায়। আর আমরা চাইলেই যেটা করতে পারতাম তা হল সেই সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে রুখতে পারতাম। হায় তা হয়নি। আজ তাই পথেঘাটে শোনা যায় সেই তেরি-মেরি গানগুলো যেখানে মানুষ আগে মনির খান, সুবির নন্দিদের গান গাইত।আবার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে তো এইসব ছেলে তৈরির কারিগর বললে ভুল হবে না। সেখানে বড়ভাইদের কাজ করে দিলে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় গাঞ্জা, হেরোইন, মদ সহ আরো কত উপঢৌকন।  তাই আমি সেই ছেলেগুলোকে দোষ দেই না।
  আবার অনেকে মেয়েগুলোর পোষাক এর ব্যাপারে বলছিলেন। আরে ভাই পোষাক এর কথা বলছেন কেন? ঐ মেয়েগুলো তো আমাদের সমাজে প্রচলিত তথাকথিত শালীনতা(!) মেনেই ছিল। আর পহেলা বৈশাখ এর মত এত বড় জাতীয় উৎসবে যদি ওনারা অংশগ্রহণ না করেন, একটু পান্তা-ইলিশ না খান তবে কি চলে! তারা নারী হয়েছে তো কি হয়েছে? সমান অধিকার ওনাদের আছে। আর ভাই আপনারা যে মহিলাগুলোকে দোষ দিচ্ছেন আপনাদের ভাবা উচিৎ যে ওনারা সেই উৎসবে না আসলে সেই ভাইয়্যারাও আসতেন না। আর ওনারা ভিনদেশী সেই চ্যানেলগুলোতে দেখা যে কাপড়গুলো কিনে থাকেন(কিনে না দিলে তো আবার আত্মহত্যা করতে পারেন) সেগুলোর শো-অফ করার একটা ব্যাপার সেপার আছে। তাই আমি তাদের ও দোষ দেই না।
   তাহলে প্রশ্ন জাগতে পারে আমি দোষ দেই কাকে! কেন আমাদেরকেই। আমরাই তো আমাদের কপালে এই দুর্ভোগ ডেকে এনেছি। আমরাই তো পহেলা বৈশাখের নামে নানা অসামাজিক কাজ করি। আমরাই তো আমাদের মা-বোনদের ঘর থেকে বের হওয়ার পথ দেখাই। আমরাই তো ভিনদেশী কু-সংস্কৃতিতে আসক্ত হয়ে তাদের মত(আসলে হায়েনা ব্যবহার করলে ভাল হত মনে হয়) ছিড়ে-খাবলে খেতে চাই নারী নামের বস্তুগুলোকে। আমাদের মিডিয়াকেও আমি দোষ দেই। তারা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এর বদলে ধার করা সংস্কৃতি ধারন করতে বলে। আমি দোষ দেশের শাসক সমাজকে। তারা চাইলেই এগুলো অনেক আগেই নজর দিতে পারত।
মিডিয়ার কথা বলতে গেলে একটা কথা মনে পড়ে। একবার আমার এক কাছের বন্ধু সহ এক জায়গায় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে বড় বড় বিলবোর্ড এ গ্রামীণ ফোন এর অ্যাড। সেখানে মেয়েদের দেখানো হচ্ছে জিন্স প্যান্ট ও টপস এ। আমি বন্ধুকে বললাম, দেখ ওরা কি করতে চাইছে? সে বলল, তুমি অবাক হচ্ছ কেনো! ঢাকায় মেয়েরা এখন এরকম ড্রেসই পড়ে। আচ্ছা তাহলে আমার কথা হল ঢাকার মাত্র কয়েক হাজার মেয়ে কি বাংলাদেশের সব নারীর প্রতিনিধিত্ব করে? করে না। কিন্তু আমাদের মিডিয়া আমাদের উদ্বুদ্ধ করছে সেগুলো গ্রহণ করতে। বাধ্য করছে অতি আধুনিক(!) সমাজের সাথে চলার জন্যই কিছু ভিনদেশী সংস্কৃতি গ্রহণ করতে। আর আমরা গোগ্রাসে তা গিলে খাই, হজম করি।
  আজ অনেকে টিএসসি এর এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করছেন। অনেকে পশু ইতর ইত্যাদি বলে গালি দিচ্ছেন সে ছেলেগুলোকে।  আচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তো প্রতিবছর এরকম ঘটনা ঘটে তখন আপনারা কই থাকেন? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর এক ছাত্র ধর্ষণ এ সেঞ্চুরি করে। আবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানজনক চাকরি দেওয়া হয়। তখন আপনি বা আপনারা কোথায় ছিলেন? আমার মনে হয় উঠ পাখির মত মাটিতে মাথা গুজে চুপ করে ছিলেন।
.
.
এ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত এবং লিখার অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য বন্ধু নাতিফ বিল হককে (siam) আন্তরিক ধন্যবাদ।

মুহাম্মদ আরিফ
২৬/০৪/২০১৫

মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০১৫

বাংলাদেশের মওকা

    বাংলাদেশ দল কোয়াটার ফাইনাল খেলবে বিশ্বকাপে। প্রতিপক্ষ চিরচেনা ভারত। ভারতকে বাংলাদেশ হারাতে পেরেছে এ পর্যন্ত ৪বার। আর খাতা কলমের হিসেবেও বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপে গিয়ে বাংলাদেশ কিছু অসাধারণ খেলা উপহার দিয়েছে। যা অন্যান্য সকল দলের কাছে মাথা ব্যাথার কারন হয়েছে। নার্ভাস ইংলিশদের হারিয়েছে, কিউইদের পায়ে কাঁপন ধরিয়েছে যা এই বিশ্বকাপে অন্তত ওরা অনুভব করেনি। ওপেনাররা জ্বলে উঠতে পারেননি তেমন, তবে মিডল অর্ডার আর লোয়ার অর্ডার এ ব্যাটসম্যানরা ভীষণ ভাল করেছে। ভারতীয় দলের কথা যদি বলি ওরাও অসাধারণ  ফর্মে আছে। এই বিশ্বকাপে খেলা ছয় ম্যাচের সবগুলোতে জিতেছে। প্রায় সব প্লেয়ারই ফর্মে আছে। তাই সবাই ভাবছে ১৯ মার্চের খেলাটা জমবে।
     এই বিশ্বকাপে ভারতীয় মিডিয়ার অন্যতম সেনসেশন হল 'মওকা' অ্যাড। এটি ভারতের বিভিন্ন ম্যাচের সাথে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এগুতে থাকে। প্রথমটি ছিল পাকিস্তানী সমর্থক কে নিয়ে। যার ক্ষোভ হল বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পকিস্তানের কোন ম্যাচ না জেতা। পাকিস্তানী এই সমর্থক কে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে নিয়েই চলতে থাকে এই অ্যাড। যার সর্বশেষ (এখন পর্যন্ত)  সেকুয়াল হল বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচ নিয়ে। যা এখনও (১৭.০৩.০১৫) পর্যন্ত টিভিতে দেখানো হয়নি। তবে শুনেছি অনলাইনে পাবলিশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমি অনেক খোঁজ করে দেখলাম কিন্তু কোথাও পেলাম না। কিছু সার্চ অপশন এ যে লিঙ্ক আসে সেখানে বলা হয় এটা মুছে ফেলা হয়েছে। ইউটিউব, স্টার স্পোর্টস এর ওয়েব সাইট কোথাও নেই। কিন্তু হ্যা এটা ছিল। অনেকেই দেখেছে। অনেকেই এটার রিপ্লাই ভিডিও ও বানিয়েছে দেখলাম। আবার অনেকে ভারচুয়াল জগতে এ নিয়ে ঝড় তুলছেন আবার কেউ কেউ চায়ের কাপে। বর্তমান সময়ে এটা সবার চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছ।
     এক লোকের বাসায় কলিং বেল বাজে। দরজা খুলতে যায় বুকে India লিখা এক লোক। দেখে যে বুকে Bangladesh লিখা এক ছেলে এসেছে। সে তাকে মানচিত্রের দিকে দেখায়।  যেখানে লিখা ছিল, India has created Bangladesh। তারপর বাংলাদেশ লিখা লোকটা ইন্ডিয়া লিখা লোকটিকে মাথা নিচু করে প্রনাম করে। মওকা, মওকা।
     এই ছিল সেই মওকা ভিডিও (যদিও আমি দেখিনি, যারা দেখেছে তাদের কাছ থেকে শোনা)। এখন প্রশ্ন হল ওরা এরকম ভিডিও কেন বানালো আবার রিমুভও করলই বা কেন।  কেন ওরা আমাদের ভিত্তি নিয়ে টানাটানি করল। কেন ওরা খেলার বিজ্ঞাপনে রাজনীতি নিয়ে এল! কারন ভারতীয় দের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ওরা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে নানা মন্তব্য করছে কিন্তু রাস্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ নিয়ে কোন প্রতিবাত করা হয়নি। সাধারণ মানুষ কিছু প্রতিবাদ করলেও কতিপয় বুদ্ধিজীবী(!) নামধারী লোকগুলো ছিল নির্বাক।  কারন ভারতকে তারা অনেক ভালবাসেন,  তাদের এ কথাগুলো সহ্য করতে না পারলে ভালবাসার আর কি মূল্য! তাই নয় কি! আমি রাজনীতিবিদ নই তাই বেশি কিছু বলতে চাই না।
      ভারতের বিভিন্ন গাল-মন্দে আমরা অনেকেই সমালোচনা করেছি আবার অনেকে চুপ করে থেকেছি। যাহোক, তবে আমার মনে হয় না এবার আমাদের এটা নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি করা উচিৎ। কারন ক্রিকেট হল শুধুমাত্র একটা খেলা। এতে রাজনীতি ঢুকানোর কোন দরকার বা এ থেকে কোন ফায়দা আমি দেখি না। ভারত সেই ভুলটি করেছে। অর্থাৎ কাঁদা ছুড়েছে। তাই বলে আমরা কেন আমাদের হাতে নোংড়া লাগাব! হ্যা, অনেকেই বলতে পারেন ওরা আমাদের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। তো!  আপনারা এতদিন কোথায় ছিলেন! ইতিহাস নয় যখন ওরা আমাদের বর্তমান, ফেলানি কে কাঁটা তারে ঝুলিয়ে রাখে! তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দেয় না! ক্রিকেটের কথায় আসি, ভারত বাংলাদেশের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল। যখন ওরা ইতিহাসে আঘাত করে আমাদের ক্ষুব্ধ করে তোলার চেষ্টা করছে তার মানে ওরা আমাদের ভয় পাচ্ছে। ভারতীয় দল না হলেও মিডিয়া পাচ্ছে। তাই এ কান্ড।
    বাংলাদেশ দলের এ বিশ্বকাপের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোয়াটার ফাইনালে যাওয়া। যা ইতিমধ্যে পূরণ হয়েছে। এরপর যা কিছুই হবে তাহল উপরি পাওনা। কারন কাপ জয়ের মত দল গঠন করতে আমাদের আরো সময় ও কঠোর পরিশ্রম এর দরকার। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য সফল অন্তত এ বিশ্বকাপে। তাই আমি মনে করি আগামী ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেলেও জাতি তাদের দোষারোপ করবে না। কিন্তু ভারত যদি হেরে যায় বাংলাদেশের কাছে তাদের পস্তাতে হবে। আর ভারত যে পরিমাণ ম্যাচ এক মৌসুমে খেলে থাকে বাংলাদেশ তা তিন বছরে খেলে। তাই পার্থক্য রয়েই যায়।
     অযথা ভারতকে দোষারোপ করে সময় নষ্ট না করি। ওরা আমাদের দলের খেলায় নিতান্তই ভীত। তাই ওদের মিডিয়া চাইছে উত্তেজনা সৃষ্টি করে দিতে। আর এসব ব্যাপারে ছোট করে বলে রাখা ভাল যে অহংকার এর ফল কিন্তু কখনোই ভাল হয় না
     শুভ কামনা বাংলাদেশ দলের জন্য......

মুহাম্মদ আরিফ
১৭/০৩/০১৫

মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০১৫

নাটক বনাম ইত্যাদি - গেলানো সংস্কৃতি ১

ভাবছিলাম আমি হঠাত গভীর ভাবে.... আমার মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর কিছুদিন ইংলিশ মুভি এবং ইংলিশ পত্রিকা অবিরত কয়েকদিন পড়েছিলাম। পিসিতে, টিভিতে শুধুই ইংলিশ মুভি দেখেছিলাম। আর নিজে কিনে ইংলিশ পত্রিকা পড়েছি (এখন সময় পাই না)। এটার কারনে আমার সাথে খুব মজার একটা ঘটনা ঘটেছিল... বলছি তা। তার আগে আরো কিছু কথা বলে নিই...

   আমার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হল "ইত্যাদি"। আমি জানি অধিকাংশ মানুষের কাছে এখনও তা। এটি আগে প্রতি মাসে একবার করে প্রচারিত হত। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩মাসে অথবা দুটো ঈদে। তো আসল কথা হল গতকাল তা প্রচারিত হয় বিটিভিতে। এর জনপ্রিয়তা আর প্রচারণার কারনে তা আমি জানতে পারি এবং অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকি কখন সেই সময় আসবে... তবে বাসায় ফিরতে একটু দেরি হয়। টিভি চালিয়ে দিয়ে দেখা শুরু করতেই ভারতীয় নাটকের আম দর্শক বৃন্দ চলে এলেন।তদের বোঝালাম যে ইত্যাদি প্রতি তিন মাস পর একবার দেখায় মাত্র আর আপনাদের এই ঝগড়া সপ্তাহে প্রতিদিন চলে... কিন্তু না আমাকে দমতে হল। কারন এই সময়ে তাদের স্কেডিউল্ড নাটক আছে। এবং কোন মূল্যেই একে মিস করা যাবে না। অগত্যা টিভির অমূল্য নিয়ন্ত্রক যন্ত্র তাদের হাতে তুলে দিয়ে আমি প্রস্থান করলাম।

     ও... আমার সাথে ঘটা মজার ব্যাপারটা সম্পর্কে তো বলা হয় নি। আমি টানা কয়েকদিন ইংলিশ মুখি হয়ে যাওয়ার পর আমি ২দিন ইংরেজিতে স্বপ্ন দেখেছিলাম :-D মানে সেখানে আমি ইংরেজিতে কথা বলছিলাম আরকি... হা হা হা। মুলত আমি ভাবছিলাম সারা বাংলাদেশে আমাদের মা-বোনরা যেভাবে হিন্দি নাটক বা সিনেমা দেখছেন দিনের পর দিন আমার মনে হয় তদের স্বপ্ন ও একদিন হিন্দি হয়ে যাবে...
.
.
নাকি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে?

মুহাম্মদ আরিফ
৩১.০১.০১৫

বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

বাঙ্গালীয়ানা

আমরা বাঙালি! !!! আমাদের
রক্তে বইছে সেই অফুরন্ত দুর্ভেদ্য সাহস ও
শক্তির জোয়ার।
যার দ্বারা আমরা পেয়েছিলাম মহান
স্বাধীনতা। আমরাও পারি তা দেখাতে চাই!!! আসুন সবাই ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের
প্রোফাইল পিকচার জাতীয় পতাকার
প্রতিকৃতি দিয়ে সাজাই। উড্ডীয়মান লাল
সবুজের পতাকার বিশ্ব রেকর্ড গড়ি।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়
ভালোবাসি
.
.
না এগুলো আমার কথা নয়। বর্তমান সময় এর পোস্ট (দেশ প্রেমিক দের) দেওয়ার কিছু নমুনা। হুম ভাল। দেশ প্রেমিক এর জোয়ারে ভাসছে এখন দেশ।কিন্তু তা আসে শুধু ফেব্রুয়ারি, মার্চ আর ডিসেম্বর এ।
.
আমাদের বাস্তব জীবনের দেশ প্রেম এর নমুনা একটু দেখা যাক।আমরা সারা দিন ভিন দেশী চ্যানেল গুলো দেখি কিন্তু দেশ প্রেমিক। বিদেশী ব্রান্ড এর কাপড় না হলে আমাদের চলে না। আমরা খুবই দেশপ্রেমিক, কিন্তু কলা খেয়ে ঠিকই চামড়াটা রাস্তাতেই ফেলি।আমরা নিজেদের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে  পশ্চিমা দের অনুকরণে ছোট ছোট কাপড় পরি(মেয়েদের ক্ষেত্রে), আমরা ৪০বছর আগের ঘটনা না দেখে ও তার বিচার চাইতে ২মাস রাস্তায় বসতে পারি,কিন্তু চোখের সামনে ঘটে যাওয়া খুনের বিচার চাইতে পারি না।আমরা ফেইসবুকে রেকর্ড গড়তে চাই, কিন্তু তার প্রতিষ্ঠাতা কে গাল মন্দ করতে দ্বিধা করি না।  আমরা সভ্য, দেশপ্রেমিক তাই আমাদের ছাত্ররা শ্রদ্ধেয় শিক্ষক কে মেরে ফেলেন।
.
আমরা এই, কিন্তু আপনাকে অবশ্যই আমাদের দেশ প্রেমিক বলতে হবে।কারন নির্দিষ্ট দিনে আমরা প্রোফাইল পিক চেঞ্জ করে পতাকা অথবা বাংলা অক্ষর দেই, এগুলো করার জন্য প্রচারণা চালাই এবং বিশ্ব রেকর্ড এর আশা করি।আমরা দেশ প্রেমিক ই বটে...

মুহাম্মদ আরিফ
১ ডিসেম্বর ২০১৪