মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭

বোবা ধরা - জ্বিন সিরিজ ৪

আজ বলব বোবা ধরা সম্পর্কে।
পর্ব-০৪

গত পর্বের পর অনেকে বলেছে যে বোবা ধরা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত বলতে। ব্যাপারটা জ্বিন ঘটিত বলাতে অনেকে বলেন এর সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আছে। তবে আমি বলেছিলাম এর সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যাগুলো ভুক্তভোগীর কিছু অভিজ্ঞতার পরিপন্থী। তাই তুলে ধরতে আজ এই লিখা।প্রথমত বোবা ধরা ব্যাপারটা সম্পর্কে আমার আইডিয়া কম(এখনো অভিজ্ঞতা হয়নি)। তাই আমি শুরুতে চেষ্টা করি ব্যাপারটা নিয়ে একটু রিসার্চ করতে।আর যেহেতু এখানে সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যার সাথে তুলনা করা হবে তাই ব্যাপারটা আরো কঠিন। কারণ সায়েন্স এর সাথে লড়ার দক্ষতা আমার নাই।

WIKIPEDIA তে Sleep Paralysis বা SP(বোবা ধরার ইংরেজি) এর সঙ্গা দেওয়া আছে এরকম
Sleep paralysis is a phenomenon in which an individual, either during falling asleep or awakening, temporarily experiences an inability to move, speak, or react.[1]

আর এর তিন প্রকার করা হয়েছে সার্বিক ভাবে।

১.ঘরে অযাচিত কিছুর উপস্থিতি ভয়।

২.ইনকুবাস নামক শয়তানের ভয়।

৩.সংবেদনশীলতা লোপ পাওয়া।

দেখা যাচ্ছে যে তিন প্রকারের দু প্রকারই অদৃশ্যে ভয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আবার যদি আমরা সায়েন্টিফিকভাবে এর প্রকারভেদ করি তবে পাওয়া যায় ২ প্রকার।

১.Hypnagogic SP: ঘুম আসার সময় শরীরের স্থিতিশীল হওয়াটা অনুভব করা।
২.Hypnopompic SP: গভীর ঘুমে REM(rapid eye movement)[2]  ও NREM(non-rapid eye movement)[3] সাইকেল এর পরিবর্তন এর ফলে ঘুম ভেঙে যাওয়া। নিজের শরীর নাড়ার ক্ষমতা লোপ পাওয়া।[4]

কিন্তু আমরা যদি ভিক্টিমদের অভিজ্ঞতার দিকে নজর দেই তবে দেখতে পাই ব্যাপারটা শুধু হাত-পা নাড়তে না পারার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।তারা বুকের উপর কাউকে দেখতে পায়।অনেকে গলা টিপে ধরা হাতের উপস্থিতি বুঝতে পারে এমনকি অনেকের গায়ে দাগও পাওয়া যায়।যেটা নিজে নিজে হওয়া সম্ভব নয় যেখানে ভিক্টিমের হাতও অবশ থাকে। আরেকটি মজার বিষয় হল এটি ঘটার জন্য ঘুমানোও লাগে না।এমন অনেক অভিজ্ঞতা আছে যেখানে ভিক্টিম বসে থাকা অথবা শুয়ে থাকে সম্পূর্ণ সজাগ অবস্থায় আক্রমণ এর শিকার হয়েছে যা সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যার পুরো বিরোধী।আপনারা আরো দেখতে পারেন নেট ঘেটে।
আমি এটা বলতে চাইছি না যে এরকম অভিজ্ঞতার সব জ্বিনেদের মাধ্যমে হয়।তবে এদের মাধ্যমেও যে এটা হতে পারে তা অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই।

[1] https://en.m.wikipedia.org/wiki/Sleep_paralysis

[2] https://en.m.wikipedia.org/wiki/Rapid_eye_movement_sleep

[3] https://en.m.wikipedia.org/wiki/Non-rapid_eye_movement_sleep

[4] http://www.webmd.com/sleep-disorders/guide/sleep-paralysis

মুহাম্মদ আরিফ
০৬ অগাস্ট ২০১৬

রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

ভয় - জ্বিন সিরিজ ৩

আজ নিয়ে এসেছি জ্বিন সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য।
পর্ব -০৩

প্রথম পর্বে আত্না(বাড়িঘরে ঘোরা আত্না) নিয়ে একটু বলেছিলাম।কিন্তু বিষয়টা পরিষ্কার করিনি। খেয়াল করলে দেখবেন মানুষের অভিজ্ঞতা বর্ণনার সময় মানুষ বলে তারা যে আত্নাটা দেখে তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। অর্থাৎ এটা Natural Cause এর মৃত্যু ছিল না। একটা মানুষের পেছনে কি পরিমাণ শয়তান লেগে থাকে গুনে শেষ করা যাবে না। যখন কারো মৃত্যু আত্নহত্যায় হয় তখন তার শয়তান সবচেয়ে বেশি সফল হয়। খুন ক্ষেত্রে যার হাতে খুন হয় তার শয়তান সফল হয়।তাই তারা সেই সফলতাকে আর একটু বাড়াতে মৃত ব্যক্তির রূপ নিয়ে মানুষের সামনে আসে। যাতে তাদের ভয় পেয়ে মানুষ নানা অনৈসলামিক কাজ করে।আরেকটা ব্যাপার হল মানুষ দুর্ঘটনাকে ভয় পায়। দেখা যায় যে একটা স্বাভাবিক রাস্তা যেখানে একটা দুর্ঘটনা হল সেখান দিয়ে যেতে মানুষ একটু ভয় পায়। সেটা ভৌতিক নয় সহজাত প্রবণতা। শয়তান এগুলোর ফায়দা নেয়।

আমাদের এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, মৃত্যুর পর পুণ্যবান আত্না ইল্লিন এবং পাপী আত্না সিজ্জিনে অবস্থান করে এবং কেয়ামত পর্যন্ত সেখানে থাকবে।তাহলে এই বিশ্বাস অনুযায়ী মৃতের আত্না অবাধে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ নেই।

জ্বিনেদের কথা বললে যেটা অবশ্যই বলতে হয় তা হল "বোবা ধরা"। ধারণা করা হয় যে জ্বিনেদের মধ্যে কিছু জ্বিন আছে যারা কথা বলতে পারে না এবং অন্যান্য জ্বিনেদের মত মানুষের সামনে আসতে পারে না।তাই তারা ঘুমের সময় বেছে নেয় এবং মানুষকে কষ্ট দেয় ঘুমের মধ্যে। ধারণা করা হয় কিছুক্ষণের জন্য এরা মানুষের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যাতে চোখের কর্নিয়া ব্যতীত শরীরের অন্যান্য অঙ্গ অবশ হয়ে যায়। এরা এদের পছন্দের নির্দিষ্ট কিছু(কারণ সবাই এটার অভিজ্ঞতা পায় না) মানুষের কাছে আসে। ভুক্তভোগী অনেক সময় বুকের উপর কাউকে চড়ে বসতে দেখে অনেক সময় দেখে না।তবে এদের দ্বারা ঘুমের মধ্যে মানুষ মারার রেকর্ড নেই।

সাধারণত আয়াতুল কুর'সি অথবা কুর'আনের কিছু আয়াত পড়লে এরা শরীর ছেড়ে দেয়। তাই ওযু করে ঘুমোতে যাওয়া এবং রাসুলের সুন্নাহ অনুযায়ী ডান কাত হয়ে ঘুমোতে যাওয়া উত্তম।

কেউ যদি ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসী পড়ে নেয় তাহলে আল্লাহর কাছ থেকে একজন রক্ষাকারী তাকে সারারাত পাহারা দিবে এবং শয়তান তার কাছে সকাল পর্যন্ত আসতে পারবেনা।
-[সহীহ বুখারী-২৩১১]

আজ এ পর্যন্ত।

মুহাম্মদ আরিফ
০৪ অগাস্ট ২০১৬

জ্বিনে ধরা - জ্বিন সিরিজ ২

জ্বিনদের সম্পর্কে আরো ববলব বলেছিলাম। আজ ২য় পর্ব,

Discovery Channel এর A Haunting অনুষ্ঠানটির ভক্ত ছিলাম অনেক। যেমনটা আমি হরর ফিল্ম এর প্রতি সামান্য আসক্ত। অনুষ্ঠানে দেখতাম কাউকে অশরীরী আক্রমণ করলে চার্চের প্রিস্ট তাকে হিল(HEAL) বা ঝাড়ফুঁক(EXORCISM) করেন বাইবেল থেকে নানা লাইন আউড়ে। তার গায়ে ছিটিয়ে দেন পবিত্র জল(জর্ডান নদীর পানি)। এতে তারা আরোগ্য লাভ করে। ব্যাপারটা আমাকে অনেক ভাবাত। কারণ আমি জানি অশরীরী যারা মানুষকে আক্রমণ করে তারা হল জ্বিন। আর জ্বিন কিভাবে তাদের করাপ্টেড(আমার মতে) ধর্মের রীতি অনুসারে ঝাড়-ফুকে ভয় পাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম শ্রদ্ধেয় এক হাফেজ বড় ভাইকে।
উনি বললেন, জ্বিন দু'ভাবে তাড়ানো যায়।

১. খোদার প্রতি বাধ্য করে,

২. খোদার প্রতি অবাধ্য করে।

এবং ওরা দ্বিতীয়টাই করে।

২নং থেকেই শুরু করব,
লক্ষ্য করলে দেখা যায় জ্বিনদের মধ্যে যারা খারাপ অর্থাৎ যারা শয়তানের দলে যোগ দিয়েছে তারাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষকে আক্রমণ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা চায় যে, কেউ যিশুর(বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম) নাম নিক এবং এতে সে চলে গেলে তারা যিশুর(বা যার নাম নেওয়া হয় তার) মহত্ব বুঝে তার প্রার্থনা করবে। তাই বেশিরভাগ সময় অন্যান্য ধর্মাবলম্বিনী লোকের ঝাড়ফুঁকেও জ্বিন পোষক দেহ ছেড়ে দেয় যদি না তার অন্য কোনো বড় স্বার্থ  থাকে।

আবার শয়তানের প্রিয় বিষয় হল ব্ল্যাক ম্যাজিক। ইসলামী পরিভাষায় যাকে কুফরি-কালাম বলে। এটা এমন একটি বিষয় যার চর্চা করার ফল পৃথিবীতেও পেতে হয় এবং পরকালেও পেতে হবে। এটা হল শয়তানের কাছে সাহায্য চাওয়া যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য চাওয়া যায় না। পশ্চিমা বিশ্বে এরকম অনেক গোপন সোসাইটি আছে যারা Lucifer(শয়তান পূজারীরা ইবলিস কে লুসিফার বলে) পূজা করে। ব্যাপারটা আমাদের দেশে অতটা জনপ্রিয় না হলেও এর অস্তিত্ব আছে। এমন অনেক ফ্যামিলি আছে যারা এর ক্ষতিকারক দিক বা ব্যাপারটা সম্পর্কে সম্পূর্ণ না জেনেই বিভিন্ন বাবার(যারা বৌদ্দ হিসেবেও পরিচিত গ্রামে-গঞ্জে) কাছে যায় অন্যের ক্ষতি করার জন্য। অথচ তারা আল্লাহ এর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নামাজ - রোজাও করে।

কাউকে জ্বিনে ধরেছে বা আছর করেছে(possess) বলা যাবে তখন, যখন আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারা রোগীর আচরণ ব্যাখ্যা করা যাবে না। এর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে যা আপনারা জেনে নিতে পারেন জ্ঞানী ব্যক্তিগণ এর কাছ থেকে। এবং এর চিকিৎসা করতে পারবেন স্রেফ কুর'আন ও হাদীসে জ্ঞানী ব্যক্তিগণ যাদের আরো অভিজ্ঞতা আছে।অর্থাৎ যারা রুকাইয়্যা করতে জানেন। রুকাইয়্যা হল ইসলামিক পদ্ধতিতে Exorcism। এবং এটা অনেক শক্তিশালী।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।

মুহাম্মদ আরিফ
৩১ জুলাই ২০১৬

ঈর্ষান্বিত উল্লাস

"যখন নাৎসিরা ইহুদীদের ধরতে এলো তখন আমি তার কোনো প্রতিবাদ করিনি কারণ-
আমি ইহুদী ছিলাম না।

যখন তারা কমিউনিস্টদের ধরতে এলো তখনো আমি কোনো প্রতিবাদ করিনি কারণ-
আমি কমিউনিস্ট ছিলাম না।

যখন তারা ট্রেড-ইউনিয়নিস্টদের ধরতে এলো তখনো আমি তার প্রতিবাদ করিনি কারণ-
আমি ট্রেড ইউনিয়নিস্ট ছিলাম না।

কিন্তু যখন তারা আমাকে ধরতে এলো তখন প্রতিবাদ করার মত কেউ অবশিষ্ট ছিল না।"

এটা জার্মান ধর্ম প্রচারক মার্টিন নিমোলার এর জনপ্রিয় একটি উক্তি। প্রটেস্টান্ট এই প্যাস্টরকে সাত বছর কাটাতে হয়েছিল কারাগারে।
এই কথাটা আজ তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা আজ গ্যালারীতে বসে তালি বাজাচ্ছেন আর উল্লাস করছেন শত অন্যায় দেখে। ঈর্ষান্বিত লোকেদের সংখ্যাই বেশি।
কে জানে হয়ত কাল আপনাদের উপরও যে পড়বে না সে ভয়াল থাবা?

পরিশেষে,
অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া রণিরাই আজ শুধু ছাত্র সমাজের গর্ব। বুটের নিচে পৃষ্ঠ হওয়া আল্লাহর কালাম বুকে ধারণকারী মাদ্রাসা ছাত্রটি মৌলবাদী। জেল থেকে পরীক্ষা দিয়ে এ+ পাওয়া ছাত্রটি ছাগু।
এটাই বাস্তবতা...

মুহাম্মদ আরিফ
১০/০৫/২০১৬

SULTAN - গেলানো সংস্কৃতি ২

কদিন আগ থেকে ফেইসবুকময় শুধু watching Sultan টাইপ স্ট্যাটাস দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম। তাই ভাবলাম দেখেই ফেলি সিনেমাটা।

অনেকে তো অনেক খুশী। একজন মুসলিম ক্যারেক্টার নিয়ে বানানো মুভি। আবার মুভির কাহিনী ও অভিনয়ে অনেকে মুগ্ধ। হারিয়ে গেছেন এর মাঝে। তাদের জন্য বলছি আপনি এড়িয়ে গেছেন অনেক কিছু যা আমার মনে হয় ডিরেক্টর  নিজেও চেয়েছিলেন যে আপনার সচেতন মন এড়াক কিন্তু অবচেতন মন নয়। কেউ খেয়াল করেছেন কি! ভারতীয় সিনেমাগুলোতে মুসলিম ক্যারেক্টার মানেই মাজার বা দরগাহ ভক্ত! তাদের চলাফেরা সব বিধর্মীর মত কিন্তু তারা নিয়মিত দরগাহে যায়। আরো মজার ব্যাপার হল কোনো হিন্দু ক্যারেক্টার মন্দিরে যায় তা অবশ্যই দেখানো হয় তবে মুসলিম ক্যারেক্টার এর মসজিদে যাওয়া দেখলাম না। তবে ঈদের নামাজ(Well done Appa নামক সিনেমাতে তো পুরোই ভুল দেখানো হয় ঈদের নামাজও) দেখানো হয়েছে কয়েকটা মুভিতে।

আরো একটি ব্যাপার আমি মনে করি সবার নজর কেড়েছে, তা হল একজন মুসলিমের হাত জোড় করা বা বলতে গেলে হিন্দুদের নমস্কার এর মত করা।  সিনেমায় সালমান খান প্রতি ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের দিকে হাত জোড় করে ক্ষমা চায়। সত্যি অনেক হাস্যকর উপস্থাপন একজন মুসলিম ক্যারেক্টার এর।

ভারতে মুসলিমরা সংখ্যালঘু হলেও তার সংখ্যা কিন্তু ২০ কোটি যা আমাদের দেশের মুসলিমদের চেয়েও অনেক বেশি। যার মধ্যে আমি বিশ্বাস করি মাত্র ২০-২৫ শতাংশ দরগাহে যায়। আমার এ বিশ্বাসের ভিত্তি হল ইসলাম এটা সমর্থন করে না। তাহলে একটু ভাবুন সেই ২০ কোটি লোকের সংখ্যালঘুদের উপস্থাপন করে সবসময় সিনেমাগুলোতে কি বুঝানো হয়!

এটাই নয় কি, দেখো মুসলিম এবং হিন্দুদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই শুধু একটা ব্যতীত, আমরা মন্দিরের মূর্তিগুলোর পূজো করি আর তোমরা দরগাহের কবরকে

বাকিটা সবার বিচক্ষণ মস্তিষ্কের উপর ছেড়ে দিলাম....

মুহাম্মদ আরিফ
১৯ জুলাই ২০১৬

শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭

কাছে আসার চটি গল্প

নাজায়েজ সম্পর্কগুলোর গল্প নিয়ে ক্লোজ-আপ কাছে আসার গল্প নামে যে ইভেন্ট করছে তা এখন আমাদের গাসহা। টিভি চালু করলেই নাটক-সিনেমাতে সব এইসব প্রেমের কাহিনী। মজার কথা হল আমরা বুঝতেই পারিনা যে  আমরা মিডিয়া দ্বারা কতটা প্রভাবিত। মিডিয়া আমাদের হারাম বিষয়গুলোকে এত সুন্দরভাবে দেখায় যে আমরা ভুলে যাই সব।
And what do we do? We just justify our sins.

প্রথমে শুরু হয় খুবই সাধারণ বিষয় দিয়ে,

-আরে আমরা তো শুধু কথা বলি।

-আরে আমরা শুধু ফ্রেন্ডস।

-আরে আমরা শুধু রিলেশানে আছি।অন্তত  আমরা তো হারাম(এদের হারাম মানে শুধু যৌন সম্পর্ক)  কিছু করছি না।

-আরে আমরা তো ক'দিন পর বিয়ে করবই এখন কিছু করলে কি সমস্য!
বেশিরভাগ সম্পর্ক এভাবে এগোয়।

আজকাল ক্লাস সিক্স-সেভেনের ছেলেমেয়েরাও প্রেম করে।গ্রাজুয়েশন শেষ করে বের হতে হতে প্রত্যেকের গড়ে ৭-৮টা রিলেশন হয় এবং ব্রেক-আপও হয়।আসলে আমি অনেক বোকা। বর্তমান সময়ে টিনেজারেরাও অবৈধ যৌন সম্পর্ক করতে ভয় পায় না প্রেমের কথা তো বাদই দিলাম।

শেষ কথা,
আজ যারা এসব করছ, তোমাদের কাছে আসার গল্প লিখছো আল্লাহ না করুক যদি ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানেরা যদি এরূপ  অনৈতিক সম্পর্কে জড়ায় তোমরা কি তাদের শাসন করার সেই সাহস পাবে? না পারবে তাদের এসব মেনে নিতে?

হয়তো তোমাদের কাছে তখন তা খুবই সাধারণ হতে পারে।আল্লাহ ভাল জানেন।
তবে যা খারাপ তা চিরকালই খারাপ।

মুহাম্মদ আরিফ
১৬ জানুয়ারি ২০১৭

স্বপ্ন - নবীন সিরিজ ১

নবীন তার ঘরে শুয়ে আছে। অলস সময়ই কাটাচ্ছে আপাতত। তাদের ঘরটা রাস্তার পাশেই তাই বাইরের আওয়াজ আসে প্রচুর।এই ধরুন এখন বাইরে বাচ্চারা চিৎকার চেঁচামেচি করছে কতগুলো গরুকে ঘিরে। এই বাচ্চাগুলারও আর কাজ নেই। কিছু একটা পেলেই হল, শুরু হবে হই-হুল্লোড়।অবশ্য তার নিজের অবস্থা এদের বয়সে এর চেয়ে খুব শান্ত ছিল এমনও না। কুরবানীর গরু এলাকায় আসা শুরু করলে সে তো আর ঘরেই আসতে চাইত না। মা বলতো কোরবান আসলে তুইও গরু হয়ে যাস।

সে  শুয়ে শুয়ে তাদের অবস্থা দেখছে আর এটা-সেটা ভাবছে।হঠাৎ করেই সব কোলাহল বন্ধ হয়ে গেল।ভালই লাগছে তার। এর মাঝে মনে হল উঠানে বাঁধা একটা গরু কথা বলে উঠল।

-ও ভাই, তুই মনমরা হয়ে বসে আছিস কেন?

কি আজব কান্ড! গরুও কথা বলতে পারে নাকি? ব্যাপার ভালভাবে বোঝার জন্য সে মনোযোগ সেদিকে নিবিষ্ট করল

-ভাল লাগছে নারে ভাই।দ্বিতীয়টাও কথা বলে উঠল।

-আমার তো ভাই খুব ভাল লাগছে।সেই অনেক দূর থেকে এসেছি এই দেশে।ভালই লাগছে এখানে এসে। এরা অনেক খেতেও দেয়।

-তুই কি ওপার থেকে এসেছিস?

-আর বলিস নে ভাই।বর্ডার পার হতেই প্রাণ যায় যায়।মালিক অবশ্য কি যেনো একটা বড়ি খাইয়ে দিয়েছিল।তাই রক্ষে।

-তো এত খুশি হচ্ছিস কেন তুই? শেষমেশ তো মানুষের পেটেই যাবি।

- যাব তো সে ভাল কথা।কারণ ওপারে থাকলে আমি কিভাবে মারা যেতাম তার নিশ্চয়তা ছিল না।কিন্তু এখানে অন্তত আল্লাহ এর নাম নিয়ে আমাকে জবেহ করা হবে।এটা তো অনেক বড় সম্মানের ব্যাপার। অবশ্য কোরবানির সময় আসতে পারলে ভাল হতো।কিন্তু আমি ছোটো ছিলাম বলে মালিক সেবার আসতে দিল না।

- এবার তাহলে তোকে বলি আমার কেন মন খারাপ। আমিও জানি এরা আমাদের আলাহ্ এর নাম নিয়ে জবাই করবে।কিন্তু জবাই করার উদ্দেশ্যটা আল্লাহর রাসুল (সা) দেখানো পথে নয়।

- আমরা কি মুসলিমদের পেটে যাব না?

- হুম অবশ্যই যাব।আমাদের কেনার জন্যই তো এরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলে।অর্ধেক তাদের পকেটে আর অর্ধেক আমাদের মালিকের পকেটে।আর বলে বেড়াবে ওদের চেয়ে আর কেউ রাসুল (সা) কে বেশি ভালবাসে না।
জানিস আমি এখানে আসার পর আমাকে যারা কিনেছে তাদের কাউকে ঐ মসজিদে যেতে দেখিনি।তারা তখন বাসাতেই থাকে।

- তুই চিন্তা করিস না।অন্তত অসুখে মরে পঁচার চেয়ে এটা ঢের ভাল।

মাগরিবের আযান হল।নবীনের এখন মসজিদে যেতে হবে।ওদিকে কে ওকে পেছন থেকে ডাকছে। নবীন! নবীন! এই নবীন! উঠ তাড়াতাড়ি। উঠে নামাজ পড়ে আয়। চোখ খুলে সে মাকে দেখতে পায়।অবস্থা সুবিধার না।মা রেগে আছেন।ঘুমের চোখ কচলিয়ে তাড়াতাড়ি মসজিদের দিকে দৌড় দিল সে।

নাহ, আগামীকাল মিলাদুন নবীর মাংস খাব আর আজ এসব স্বপ্ন!  এখন থেকে ফেইসবুকে আজেবাজে স্ট্যাটাস পড়া বন্ধ করতে হবে...

মুহাম্মদ আরিফ
২২ডিসেম্বর ২০১৬

ভালবাসা দিবস স্পেশাল

আসুন আজ আপনাদের সাথে কিছু মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করি। আজ তো খুব ধুমধামের সাথে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভালবাসা দিবস বা ভ্যালেটাইন'স ডে। যার আসল নাম ছিল "SAINT VALENTINE DAY"। হুম, এ খবর টা সবাই জানেন যে ধর্ম প্রচারক ভ্যালেন্টাইন এর নামে এই দিবস। কিন্তু কেন? সবাই এই দিবসকে ভালবাসার দিবস হিসেবে বেছে নিলো তার হিসেব এখনো অনেকের কাছে কাঁচা। যাহোক, পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন ছিলেন রোমের খ্রিষ্টান গির্জার একজন পাদ্রী। তিনি গোপনে লোকেদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করিয়ে দিতেন। সেইসময়কার রোম শাসক বিয়ে নিষিদ্ধ করেছিলেন। তাই তিনি চটলেন ভ্যালেন্টাইন এর উপর। তাকে বন্দী করা হল। তিনি ভ্যালেন্টাইন কে প্রস্তাব দিলেন প্রাচীন রোমান ধর্মে ফিরে আসতে।  তার এই আহবানে সাড়া না দেওয়ায় মরতে হয় পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন কে। তারিখটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৬৯ খ্রিস্টাব্দ।

অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন। খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়।(যাদের চুলকানি আছে Wikipedia তে ঢু মারতে পারেন)

এইসব তো কিতাবি কথাবার্তা বললাম। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন হয়ে গেছে এই দিবসের ক্ষেত্রে। ঠান্ডা মাথায় ভাবলে কয়েকটি বিষয় আসে,

♦ দিবসটি পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন যাকে পরে সেইন্ট উপাধি দেওয়া হয়েছিল এর স্মরণে পালিত হত।

♦ দিবসটির প্রবর্তক খ্রিস্টানদের পোপ। বলা যায় এটি খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠান।

♦ এই দিবসের সাথে ভালবাসার আদৌ কোনো সম্পর্ক ছিল না।

♦ ভ্যালেন্টাইন ভালবাসার জন্য মারা যাননি তিনি খ্রিস্টান ধর্মে অটল বিশ্বাসের জন্য মারা যান।

♦ এটি পৃথিবীতে অনেকবার নিষিদ্ধ হয়েছে।

আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে বলতে গেলে এই দিবসের বিস্তৃতির ভয়ংকর প্রভাব পড়ছে সামাজিক অবস্থায়।

♣ সামাজিক মূল্যবোধ এর জায়গা থেকে আমরা সরে আসছি।

♣ রক্ষণশীল মনোভাব ভেঙে যাওয়ার ফলে তরুণ-তরুণীরা অবৈধ সম্পর্কে উৎসাহী হচ্ছে।

মুসলিমদের ক্ষেত্রে দিবসটির ব্যাখ্যা আরো অন্যরকম। এক্ষেত্রে এটি অবশ্যই বর্জনীয়। কারন,

→ এটা বিধর্মীদের উৎসব। যা পালন করা গুনাহের কাজ।

→ মুসলিমদের জন্য ঈদ বা উৎসব হল শুধুমাত্র দুইটি যা সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

→ এই দিবস তরুণ-তরুণীদের অবৈদ যৌনাচারে উদ্বুদ্ধ করে যা ইসলামী অনুশাসনে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ।

অনেকে মনে করেন যে ব্যক্তিগত কিছু ব্যপারে ধর্মের কেন এত নাক গলানো অথবা কিছু করত্র গেলেই কতগুলো ধর্মকেই কেন টেনে আনেন! হুম, এটা সত্য যে আমার মত অনেকেই কিছু বলতে গেলেই মাঝখানে ধর্মকে টেনে আনি। আবার এটাও সত্য যে ইসলাম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের দিক নির্দেশনা দিয়েছে। ব্যাপার হচ্ছে যে আপনি যদি এমন একটি গাইড পান যাতে সব নির্দেশনা দেওয়া আছে তবে কেন আপনি মূর্খের মত কাজ করবেন? এটা ঠিক যে আমরা সঠিকভাবে সম্পূর্ণ ইসলামের অনুশাসন মেনে চলতে পারি না। কিন্তু চেষ্টা করতে ক্ষতি কোথায়? আর এটা তো সামান্য বিষয় মাত্র। এমন তো না যে ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন না করলে আপনার আর্থিক ক্ষতি হবে অথবা আপনার জীবন সংশয়ে আছে এটা পালনের ব্যর্থ হলে! আমি জানি এমনটা কিছুই না। তাহলে যেখানে এটি পালন না করলেই আপনার লাভ এবং পালনে আপনার এবং দেশের ক্ষতি তাহলে  সামান্য এই কাজে কেন এত দ্বিধা? কেন গালি দেওয়া হয় ধর্মকে সব ব্যাপারে নাক গলানোর জন্য? কেন ভ্যালেন্টাইন ডে বিরোধীদের উন্নাসিক বলা হবে!

পরিশেষে রাস্তায় শুধু চুমো নয় মিলন এমনকি বাচ্চাটাও পেট থেকে সেখানেই বেরুবে যদি না আমরা সুক্ষ্ণ ব্যাপারটার গুরুত্ব না বুঝি...
আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত করুন।
ধন্যবাদ।

মুহাম্মদ আরিফ
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিশ্বাস - জ্বিন সিরিজ ১

আপনার ঘটনা বলার আগে আপনি বলুন আপনি অতিপ্রাকৃত এর অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন কি না! ভূত এফএম টাইপের অনুষ্ঠানগুলোর কমন প্রশ্ন। উত্তরে বাঙলার আপামর জনসাধারণ এর অধিকাংশই বলে থাকেন যে তারা আগে করতেন না তবে এখন করেন। অনেকে ভূত-প্রেত-আত্নার অনেক গাঁজাখুরি গল্প বর্ণনা করেন।

পয়েন্টে আসি। প্রথমত, আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তবে আপনাকে অবশ্যই অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে হবে।কারণ ইসলামী বিশ্বাসের অনেক কিছুই জড়িয়ে অদৃশ্যে বিশ্বাসের সাথে। আল্লাহকে আমরা দেখতে পাই না কিন্তু আমরা তাঁর ইবাদত করি। আবার আপনাকে এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে জ্বিন জাতি বলে আলাদা একধরণের আল্লাহ এর সৃষ্টি আছে।

“আমি জ্বিন ও মানুষকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি” 
[আয্ যারিয়াত :৫৬]

কুর'আনে জ্বিনদের নিয়ে আলাদা সূরা পর্যন্ত নাজিল হয়েছে। হাদীস শরীফে বহুবার তাদের কথা বলা হয়েছে। তারপরও আমাদের দেশের বাবা-মা তাদের সন্তানকে শিক্ষা দেয়, ভয় পেয় না জ্বিন-ভূত কিচ্ছু নেই। জ্বিনদের সম্পর্কে আরো জানার ইচ্ছা থাকলে আপনি পড়তে পারেন আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতি এর লিখা বাংলায় অনুবাদকৃত "জ্বিন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস" বইটি [ইন্টারনেটে পাওয়া যায়]।

আমার দ্বিতীয় কথাটি হল মৃত মানুষের আত্নার অস্তিত্ব। যদি মুসলিম হন আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে মৃত মানুষের আত্না এ পৃথিবীতে আর ফিরে আসতে পারে না। হাদীসে এসেছে তারা রুহের জন্য নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করে কেয়ামত পর্যন্ত। তবে কবরে সোয়াল-জাওয়াব এর জন্য রুহকে পূণরায় দেহে ফেরত আনা হয়।

"যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে
পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন।যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই
নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস
পর্যন্ত।"
-[সূরা আল মুমিনুন: ৯৯-১০০]

কিন্তু আপনি যদি গাঁজাখুরি গল্প শুনেন আপনি শুনবেন অমুকের আত্না এসে ডিস্টার্ব করছে। তমুকের অতৃপ্ত আত্না ঘুরে বেড়ায় ওখানে। আসলে এগুলো হল দূষ্ট জ্বিনদের কাজ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তারা এরুপ করে থাকে।
জ্বিনদের সম্পর্কে ভবিষ্যতে আরো লিখার ইচ্ছা আছে। তবে আজ এপর্যন্ত।

মুহাম্মদ আরিফ
২৭ জুলাই ২০১৬