শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭

ভালবাসা দিবস স্পেশাল

আসুন আজ আপনাদের সাথে কিছু মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করি। আজ তো খুব ধুমধামের সাথে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভালবাসা দিবস বা ভ্যালেটাইন'স ডে। যার আসল নাম ছিল "SAINT VALENTINE DAY"। হুম, এ খবর টা সবাই জানেন যে ধর্ম প্রচারক ভ্যালেন্টাইন এর নামে এই দিবস। কিন্তু কেন? সবাই এই দিবসকে ভালবাসার দিবস হিসেবে বেছে নিলো তার হিসেব এখনো অনেকের কাছে কাঁচা। যাহোক, পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন ছিলেন রোমের খ্রিষ্টান গির্জার একজন পাদ্রী। তিনি গোপনে লোকেদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করিয়ে দিতেন। সেইসময়কার রোম শাসক বিয়ে নিষিদ্ধ করেছিলেন। তাই তিনি চটলেন ভ্যালেন্টাইন এর উপর। তাকে বন্দী করা হল। তিনি ভ্যালেন্টাইন কে প্রস্তাব দিলেন প্রাচীন রোমান ধর্মে ফিরে আসতে।  তার এই আহবানে সাড়া না দেওয়ায় মরতে হয় পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন কে। তারিখটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৬৯ খ্রিস্টাব্দ।

অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন। খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়।(যাদের চুলকানি আছে Wikipedia তে ঢু মারতে পারেন)

এইসব তো কিতাবি কথাবার্তা বললাম। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন হয়ে গেছে এই দিবসের ক্ষেত্রে। ঠান্ডা মাথায় ভাবলে কয়েকটি বিষয় আসে,

♦ দিবসটি পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন যাকে পরে সেইন্ট উপাধি দেওয়া হয়েছিল এর স্মরণে পালিত হত।

♦ দিবসটির প্রবর্তক খ্রিস্টানদের পোপ। বলা যায় এটি খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠান।

♦ এই দিবসের সাথে ভালবাসার আদৌ কোনো সম্পর্ক ছিল না।

♦ ভ্যালেন্টাইন ভালবাসার জন্য মারা যাননি তিনি খ্রিস্টান ধর্মে অটল বিশ্বাসের জন্য মারা যান।

♦ এটি পৃথিবীতে অনেকবার নিষিদ্ধ হয়েছে।

আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে বলতে গেলে এই দিবসের বিস্তৃতির ভয়ংকর প্রভাব পড়ছে সামাজিক অবস্থায়।

♣ সামাজিক মূল্যবোধ এর জায়গা থেকে আমরা সরে আসছি।

♣ রক্ষণশীল মনোভাব ভেঙে যাওয়ার ফলে তরুণ-তরুণীরা অবৈধ সম্পর্কে উৎসাহী হচ্ছে।

মুসলিমদের ক্ষেত্রে দিবসটির ব্যাখ্যা আরো অন্যরকম। এক্ষেত্রে এটি অবশ্যই বর্জনীয়। কারন,

→ এটা বিধর্মীদের উৎসব। যা পালন করা গুনাহের কাজ।

→ মুসলিমদের জন্য ঈদ বা উৎসব হল শুধুমাত্র দুইটি যা সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

→ এই দিবস তরুণ-তরুণীদের অবৈদ যৌনাচারে উদ্বুদ্ধ করে যা ইসলামী অনুশাসনে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ।

অনেকে মনে করেন যে ব্যক্তিগত কিছু ব্যপারে ধর্মের কেন এত নাক গলানো অথবা কিছু করত্র গেলেই কতগুলো ধর্মকেই কেন টেনে আনেন! হুম, এটা সত্য যে আমার মত অনেকেই কিছু বলতে গেলেই মাঝখানে ধর্মকে টেনে আনি। আবার এটাও সত্য যে ইসলাম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের দিক নির্দেশনা দিয়েছে। ব্যাপার হচ্ছে যে আপনি যদি এমন একটি গাইড পান যাতে সব নির্দেশনা দেওয়া আছে তবে কেন আপনি মূর্খের মত কাজ করবেন? এটা ঠিক যে আমরা সঠিকভাবে সম্পূর্ণ ইসলামের অনুশাসন মেনে চলতে পারি না। কিন্তু চেষ্টা করতে ক্ষতি কোথায়? আর এটা তো সামান্য বিষয় মাত্র। এমন তো না যে ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন না করলে আপনার আর্থিক ক্ষতি হবে অথবা আপনার জীবন সংশয়ে আছে এটা পালনের ব্যর্থ হলে! আমি জানি এমনটা কিছুই না। তাহলে যেখানে এটি পালন না করলেই আপনার লাভ এবং পালনে আপনার এবং দেশের ক্ষতি তাহলে  সামান্য এই কাজে কেন এত দ্বিধা? কেন গালি দেওয়া হয় ধর্মকে সব ব্যাপারে নাক গলানোর জন্য? কেন ভ্যালেন্টাইন ডে বিরোধীদের উন্নাসিক বলা হবে!

পরিশেষে রাস্তায় শুধু চুমো নয় মিলন এমনকি বাচ্চাটাও পেট থেকে সেখানেই বেরুবে যদি না আমরা সুক্ষ্ণ ব্যাপারটার গুরুত্ব না বুঝি...
আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত করুন।
ধন্যবাদ।

মুহাম্মদ আরিফ
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন